তেঁতুল এর অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ
 June 24, 2018
June 24, 2018
                                        
                                            
                                             25850 Views
25850 Views
                                        
                                        
                                            
                                     
                                        তেঁতুল একপ্রকার টক ফলবিশেষ। হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে এটি খুব উপকারী। তেঁতুল বসন্তকালের ফল হলেও সারা বছরই এটি পাওয়া যায়। তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর ভেষজ ও পুষ্টিগুণ। এটি পরিপাকবর্ধন ও রুচিকারক। আসুন জেনে নিই তেঁতুল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে।
তেঁতুল একপ্রকার টক ফলবিশেষ। হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে এটি খুব উপকারী। তেঁতুল বসন্তকালের ফল হলেও সারা বছরই এটি পাওয়া যায়। তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর ভেষজ ও পুষ্টিগুণ। এটি পরিপাকবর্ধন ও রুচিকারক। এর খাদ্যশক্তির পরিমাণ ওণযাণ্য ফলের চেয়ে অনেক বেশি। তেতুলে আয়রনের পরিমাণ সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ২০ গুণ বেশি। এতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ১৭ গুণ বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তেঁতুলে মোট খনিজ পদার্থ ২.৯ গ্রাম, খাদ্য-শক্তি ২৮৩ কিলোক্যালোরি, আমিষ ৩.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ৬৬.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৭০ মিলিগ্রাম, আয়রণ ১০.৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৬০ মাইক্রোগ্রাম ও ভিটামিন সি ৩ মিলিগ্রাম। নিম্নে তেঁতুল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
তেঁতুল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা
হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে:
তেঁতুলের মধ্যে টার্টারিক অ্যাসিড‚ ম্যালিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম থাকে যা কোষ্ঠন্যকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা থেকে রেহাই পেতে তেঁতুলের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া পেটের ব্যথা সারাতে তেঁতুল গাছের ছাল এবং শিকড় ব্যবহার করা হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে:
তেঁতুলে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার বা আঁশ । এছাড়াও এতে hydroxycitric acid থাকে যা খিদে কমাতে খুবই কাজে দেয়। রিসার্চ করে দেখা গেছে যে তেঁতুল সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রি হওয়ায় রোজ তেঁতুল খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এর জন্যে দায়ী এতে flavonoids and polyphenols রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
হার্ট বা হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে:
তেঁতুল খুবই হার্ট ফ্রেন্ডলি কারণ এতে ফ্ল্যাভরনয়েড উপাদান বিদ্যমান যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডও জমতে দেয় না। এছাড়া এতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় পটাশিয়াম যা রক্ত চাপ কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে:
তেতুল বীজে alpha-amylase নামক এক ধরনের এনজাইম থাকে যা রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে তেঁতুলের বীজের ভুমিকা অপরিসীম।
লিভার সুরক্ষিত রাখতে :
তেঁতুল আমাদের লিভার বা যকৃতকেও ভালো রাখতে ভুমিকা রাখে। নিয়মিত তেঁতুল পাতা ব্যবহার করলে ক্ষতিগ্রস্থ লিভার বা যকৃৎ অনেকটা সেরে উঠে।
সর্দি কাশি দূর করতে:
তেঁতুলে রয়েছে antihistaminic properties প্রপার্টি যা শরীরে অ্যালার্জি হতে বাঁধা দেয়। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন C যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
আলসার রোধ করতে:
অনেকেই পেটে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে পেপটিক আলসারে ভুগে থাকেন যা খুবই বেদনাদায়ক। রিসার্চ করে দেখা গেছে তেঁতুলের বীজের গুঁড়ো নিয়মিত খেলে পেপটিক আলসারের সেরে যায়। এতে উপস্থিত পলিফেনলিক কম্পাউন্ড যা আলসার সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে বা হতে দেয় না। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেয়ে আলসার হওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।
ত্বক উজ্জ্বল ও রোগমুক্ত রাখতে:
তেঁতুল ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রে-র হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে সাহায্য করে। এছাড়াও যাদের ব্রণ রয়েছে তাদের জন্য তেঁতুল উপকারী। এতে উপস্থিত হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের মৃত চামড়া কোষ অপসারণ করতে সাহায্য করে। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও রোগমুক্ত থাকে ।
আঘাত জনিত ক্ষত সারিয়ে তুলতে:
তেঁতুল গাছের পাতা এবং ছালে অ্যান্টি-সেপটিক এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুণ রয়েছে‚ তাই এটি আঘাত জনিত ক্ষত সারিয়ে তুলতে ভুমিকা রাখে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে:
তেঁতুলে অধিক মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা কিডনি ফেলিওর এবং কিডনি ক্যান্সার রোধ করতে সাহায্য করে।
প্রচন্ড টক স্বাদের এই ফলটি অনেকেরই প্রিয় খাবার। একটি ফল হলো তেঁতুল। তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে তাই হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী এটি। এতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় তা ত্বক, মাড়ি ও চুলের জন্য উপকারী। এছাড়া তেঁতুল খাবারের রুচিও বাড়ায়। তাই আমাদের নিয়মিত শারীরিক উপকারিতার জন্য কিছুটা পরিমানে হলেও তেঁতুল খাওয়া উচিৎ।



 
                                