শীতের সবজি 'বিট' খাওয়ার অসাধারণ কিছু উপকারিতা
 November 26, 2018
November 26, 2018
                                        
                                            
                                             9481 Views
9481 Views
                                        
                                        
                                            
                                     
                                        বাজারে গিয়ে নানান সবজি কিনলেও একটি শীতকলীন সবজি যার নাম বিট তাকে আমরা প্রায়ই এড়িয়ে চলি। এর রয়েছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সহ চমকে যাওয়ার মতো কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা। চলুন জেনে নিই বিট খাওয়ার কিছু চমৎকার উপকারিতা সম্পর্কে।
আমরা বাজারে গেলে নানান ধরনের সবজি কিনলেও একটি সবজি প্রায়ই এড়িয়ে চলি যার নাম বিট। এটি একটি উপকারি শীতকালীন সবজি যার উপকারিতা অনেকেরই অজানা।এর রয়েছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সহ চমকে যাওয়ার মতো অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। চলুন জেনে নিই বিট খাওয়ার কিছু চমৎকার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
বিটের বিভিন্ন পুষ্টি গুনাগুণ
বিটে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক,ক্লোরিন, আয়রন ও সোডিয়াম সহ নানা উপকারি উপাদান। এতে কোন কোলেস্টেরল নেই। প্রতি একশ গ্রাম বিটে ৪৩ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। নিম্নে এর পুষ্টি গুনাগুণ দেওয়া হলো-
প্রতি ১০০ গ্রাম বিটে রয়েছে
পলিসেচুরেটেড ফ্যাট – ০.২ গ্রাম
সোডিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ৩২৫ মিলিগ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ১০ গ্রাম (আঁশ ২.৮ গ্রাম ও চিনি ৭ গ্রাম)
প্রোটিন ১.৬ গ্রাম
ভিটামিন সি ৮%
ভিটামিন বি ৬ ৫%
আয়রন ৪%
ম্যাগনেসিয়াম ৫%
বিটের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা
বিটে ডায়াবেটিস হতে আরম্ভ করে অ্যানিমিয়া, উচ্চ রক্তচাপ ও থাইরয়েডের মত সমস্যার ক্ষেত্রে অনেক উপকারি। তাই শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন উপাদান সমৃদ্ধ শীতের সবজি বিট খাদ্যতালিকায় রাখাই যায়। নিম্নে এর বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা বর্ণনা করা হলো।
অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ
রক্তাল্পতাজনিত সমস্যা যাদের রয়েছে তারা বিট খেলে অনেক উপকার পেতে পারেন কারন এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। নিয়মিত বিট খেলে তা শরীরে প্রয়োজনীয় রক্তের যোগান দিয়ে রক্তাল্পতার সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া মহিলাদের মধ্যে যাদের অনিয়মিত তাদের এই পিরিয়ডের সমস্যা উত্তরনে কিংবা যাদের খুব কম পিরিয়ড হয় তারাও এটি থেকে উপকার পেতে পারেন। এছাড়া বিট শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতেও কার্যকরী।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নেই এমন পরিবার খুঁজে পাওয়া মুশকিল।কিন্তু শীতের মৌসুমে হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য বিট উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে দারুন উপকার বয়ে আনতে পারে। গবেষণা করে দেখা গেছে যারা বেশি করে বিট খায় বা বিটের রস পান করে তাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কম। নাইট্রেট নামক উপাদান থাকা এটি ওষুধের থেকেও ভালো কাজ করে। এটি শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রেখে আমাদের স্ট্রোকের হাত থেকে বাঁচাতে সহায়তা করতে পারে।
লিভারের ফাংশনকে ভালো রাখা
নিয়মিত ফাস্ট ফুড খাওয়ায় অভস্ত্য আমাদের লিভারের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যাচ্ছে।বিট আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি বদহজম ও অন্যান্য পেটের অন্যান্য রোগ যেমন জন্ডিস, ডায়রিয়া, প্রভৃতি রোগের ক্ষেত্রেও অনেক উপকারি। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে লিভারের ফাংশনকে ভালো রাখে।
দেহের শক্তি বৃদ্ধি
দেহকে সুন্দর ও ফিট রাখতে রোজ জিমের পাশাপাশি বিট খেলে তা পেশীর শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া বিটের রস খুব তাড়াতাড়ি এনার্জির যোগান দেয় বলে জিমের পর খুব ক্লান্ত লাগলে খেয়ে নিতে পারেন একগ্লাস বিটের রস খেলে আপনি মুহূর্তেই হারানো এনার্জি ফিরে পেতে পারেন।
হাড় মজবুত রাখা
বিট হাড়ের জন্যও অনেক উপকারী কারণ এটি হাড়কে মজবুত রাখতে সহায়তা করে। তাই প্রতিদিন বেশি করে খান বিট খাওয়া উচিত। এর শরীরে ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সাহায্য করে বলে হাড়ের যেকোনো সমস্যা রোধে এটি অনেক উপকারি। তাই যারা নিয়মিত বিট খায় তারা বৃদ্ধ হলে তাদের হাড়ের সমস্যায় ভুগতে হয়না।
ডিপ্রেশন দূর করতে
ডিপ্রেশন দূর করতে বিটের বিটের মত উপকারি উপাদান নেই বললেই চলে। এতে থাকা বিটেইন ও ট্রিপটোফোন নামক উপাদান মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই মন ভালো না থাকলে খেতে পারেন বিটের সরবত।
ত্বক ভালো রাখতে
বিটের রয়েছে অ্যান্টি-এজিং গুনাগুণ তাই এটি ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে বেশ সহায়ক। এছাড়া বিট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও অন্যান্য সমস্যা যেমন ব্রন, বলিরেখা দূর কাজ করে। উজ্জ্বল ত্বক লাভ করতে তাই প্রতিদিন একগ্লাস বিটের সরবত খেতে পারেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
বিটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে আনতে ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।
শুধু বর্তমানে নয় প্রাচীন সময় থেকেই বিটের অনেক কদর রয়েছে। এতক্ষণ আমরা জেনে নিলাম বিটের নানা স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা এখন মানার পালা। যাঁরা এই শীতের মৌসুমেও সতেজ ত্বক চান তাঁদের জন্য সেরা শীতের সবজি এই বিট। তাই নিজেকে সুন্দর ও হেলদি রাখতে তথা শরীর ফিট বা ঠিক রাখতে চাইলে আজ থেকেই খাদ্যতালিকায় অবশ্যই বিট যোগ করুন ।



 
                                