রমজানে সুস্থ থাকতে যে সকল খাদ্যাভাস মেনে চলতে হবে
 April 26, 2020
April 26, 2020
                                        
                                            
                                             4719 Views
4719 Views
                                        
                                        
                                            
                                     
                                        রোজার থাকার যে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে এই কথাটি কম বেশি সবাই জানে। ধৈর্য শক্তি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ধরণের অনিশ্চিত পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে রোজা আমাদের শরীরকে মেদ মুক্ত করতে সাহায্য করে।
এটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, রমজানের আসন্ন দিনগুলিতে একটি সঠিক ডায়েট বা খাদ্য পরিকল্পনা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমাদের মধ্যে অনেকেই রোজা থাকবে সেহেতু সেহেরি এবং ইফতারে একটি নিয়ম অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা আমাদের জন্যে অত্যন্ত দরকার, যেখানে সুষম খাবার ও পানীয় এর পরিমাণ অন্য খাবাবের তুলনায় ক্ষানিক বেশি থাকবে।
লক্ষ্য রাখতে হবে সেহেরির সময় খাবার যেন স্বাস্থ্যকর হয় এবং তা যেন এমন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় হয়, যাতে করে খাবারগুলো ইফতার এর আগে পর্যন্ত শক্তি সরবারহ করতে পারে। কোনো খাবারই অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া বা গ্রহণ করা উচিত নয়, এমন সব খাবার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত রাখতে হবে যা হবে পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর পাশাপাশি ধীরে ধীরে হজম হবে। ইফতারে ভিটামিন সমৃদ্ধ প্রচুর পরিমাণে রস জাতীয় পানীয় অন্তর্ভুক্ত (শরবত, ফলের রস বা আপনি যদি পছন্দ করেন তবে পুরো আস্ত ফলগুলিও খেতে পারেন) রাখুন।
নবী-রাসূলগণের পথ-নির্দেশনা অনুসারে খেজুর দিয়ে রোজা খোলার নিয়ম রয়েছে, এবং খেজুর এমন একটি ফল যা কিনা এর পুষ্টি উপাদান এর জন্যে অনন্য এবং বিখ্যাত। খেজুরে আছে গ্লুকজ আর শর্করার এমন এক মিশ্রন যা দেহে তাৎক্ষনিক শক্তি যোগায়। আরও রয়েছে উচ্চস্তরের পটাশিয়াম ( কলার তুলনায় প্রায় ৬৪ শতাংশ বেশি) এবং কার্বোহাইড্রেটের একটি বিশেষ মিশ্রণ যা তাৎক্ষনিক দেহের পানির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। এটিতে বিটা-ডি-গ্লুকান নামক উপাদান রয়েছে যা পেটকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
পুরো মাসের সময় ডায়েটের পরিপূর্ন নিয়মটি হলো সমস্ত প্রধান খাদ্য শ্রেনীর খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত:
ফল এবং সবজি
রুটি সহ অন্যান্য শস্য এবং আলু
মাছ এবং মাংস
দুধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য
চর্বি এবং চিনিযুক্ত খাবার
যেসকল খাবার এড়িয়ে চলতে হবেঃ
ভাজা এবং চর্বিযুক্ত খাবার যেমন পাকোরা, সিঙ্গারা, সমুচা বা তৈলাক্ত তরকারী বা অতিরিক্ত তেলে ভাজা বা রান্না করা খাবার এবং পেস্ট্রি ইত্যাদি।
এমন সকল খাবার পরিহার করতে হবে যেগুলোতে অতি মাত্রায় চিনি ব্যবহৃত হয়।
সেহেরিতে যেকোনো খাবারই অতি মাত্রায় খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
সেহেরিতে অতি মাত্রায় চা পান থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ চা মূত্র চাপ বৃদ্ধি করে যার ফলে দেহের খনিজ পদার্থের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
যেসকল খাবার গ্রহণ করতে হবে বা খেতে হবেঃ
-   সেহেরিতে এমন সব খাবার খেতে হবে যেগুলোতে ভাল পরিমানে শর্করা থাকে এতে করে আমাদের রোজা রাখতে থাকতে সুবিধা হবে এবং আমাদের ক্ষুদা কম অনুভূত হবে। 
-   হালিম হচ্ছে কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এর দুর্দান্ত একটি উৎস। 
-   বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং উল্লেখযোগ্য কম হারে চর্বি থাকে যা দেহের জন্যে অত্যন্ত উপকারী। 
-   কলা পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম একটি উৎস। 
পানীয়ঃ
ইফতার এবং শোবার সময় যতটা সম্ভব পানি বা ফলের রস পান করুন যাতে সময় মতো শরীরের পানির মাত্রা ঠিকঠাক থাকতে পারে।
স্বাস্থ্যকর বিকল্পঃ
-   শস্যদানা যেমন ছোলা গম ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। 
-   চাঁপাটি (যা সম্পূর্ন তেল ছাড়া তৈরি), এছাড়াও গ্রীল করা মুরগী বা মাংস খাওয়া যেতে পারে। 
-   দুধ দ্বারা তৈরিকৃত মিষ্টি বা পুডিং খাওয়া যেতে পারে। 
-   পরিপূর্ন ভাবে খাবার রান্না করতে হবে এবং ভাজতে হবে। 
স্বাস্থ্যকর রান্না পদ্ধতিঃ
-   যেকোনো খাবার পুরোপুরি ডুবন্ত অবস্থায় ভাজা যাবে না। 
-   গ্রীল বা বেক করা খাবার স্বাভাবিক ভাবেই স্বাস্থ্যকর হয় তবে মাছ এবং মাংসের ক্ষেত্রে এটি বিশেষত অনুসরন করা হয়। 
স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক এরকম আরো তথ্য পেতে নিয়মিত চোখ রাখুন ডাক্তারভাই অ্যাপে।



 
                                