বাচ্চাদের খাবারের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
 January 15, 2018
January 15, 2018
                                        
                                            
                                             13979 Views
13979 Views
                                        
                                        
                                            
                                     
                                        একেক শিশুর একেকরকম খাবারের চাহিদা থাকে। কোন শিশু কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই একদিন তাকে দেয়া খাবার খেয়ে নেয় ও অন্যদিন হয়তো সে তা একদমই খেতে চায় না। বাচ্চাদের খাওয়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে নিম্নের কতিপয় কেয়ার গাইডলাইন বা দিক নির্দেশনা কাজে দিতে পারে।
শিশুর খেতে না চাওয়াটা খুব সাধারণ একটি সমস্যা। এতে মা-বাবা অনেক সময় খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন। তারা আশংকাবোধ করেন যে ঠিকমতো না খাওয়ার কারণে হয়তো তাঁর শিশুটির স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাচ্চাদের খাওয়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে নিম্নের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
১। নিজে নিজে খাবার খেতে অভ্যস্ত করে তোলাঃ
শিশু যখন বসতে শেখে তখন তাকে নিজে নিজে খাবার খেতে অভ্যস্ত করে তুলুন। এর ফলে সে বিভিন্ন খাবারের রং, ধরন, গন্ধ সন্মন্ধে ভালোভাবে জানবে। পাশাপাশি নানারকম খাবার ধরে খেতে শেখার মাধ্যমে তাঁর বিভিন্ন খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে।
২। কখনও জোর বা মারধর করে খাওয়ানো যাবেনাঃ
মনে রাখা দরকার শিশুরা মাঝে মধ্যে যখন খেলাধুলা কমিয়ে দেয় তখন তাদের খাবারের চাহিদাও কমে যায়। তাই শিশুকে কখনও জোর করে কিংবা বকা দিয়ে বা মারধর করে খাওয়ানো উচিত নয়। উৎসাহ দিয়ে, প্রশংসা করে শিশুকে খাওয়াতে হবে।
৩। দিনে-রাতের মূল খাবারের কাছাকাছি সময়ে নাস্তা দেওয়া যাবেনাঃ
শিশুকে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও রাতের মূল খাবারের মাঝে দুবার হালকা নাস্তা দিতে হবে। ভারি নাস্তা বা মূল খাবারের অল্প আগে কোনো খাবার খেলে শিশুর ক্ষুধাভাব কমে যায়। তাই লক্ষ্য রাখতে হবে যে তাঁর নাস্তা যেন খুব ভারি ও মূল খাবারের কাছাকাছি সময়ে দেওয়া না হয়।
৪। নাস্তা ও মূল খাবারের পরিমাণে পার্থক্য রাখাঃ
অনেক সময় অভিভাবকগণ শিশুকে নাস্তা ও মূল খাবার একই পরিমাণ দিয়ে থাকেন যা তাঁর শরীরে ক্ষুধামন্দা তৈরি করতে পারে। তাই খেয়াল রাখতে হবে যেন শিশুর নাস্তার পরিমাণ মূল খাবারের চেয়ে কম হয়।
৫। খাবারের বিষয়ে শিশুর পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়াঃ
কোন কিছু খাবারের বিষয়ে শিশুর পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তার খাবারে বৈচিত্র্যও আনা দরকার। শিশুকে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে কোন আইটেমটা তাঁর পছন্দ অর্থাৎ সে যেটা খেতে চাইবে সেটাই তাকে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের খাবার শিশুকে দিন। একই ধরনের খাবার বারবার না খাইয়ে খাবারে বৈচিত্র আনুন।
৬। শিশুকে চকলেট, জুস জাতীয় খাবারে নিরুৎসাহিত করাঃ
শিশুকে চকলেট, জুস— ধরনের খাবার কমিয়ে দিন। শিশুকে ফলের রস বা জুস না খাইয়ে আস্ত ফল খাওয়ানো ভালো । খুব বেশি পরিমাণে তরল খাওয়ালে শিশুর পেট তাড়াতাড়ি ভরে যায় এবং পুষ্টির চাহিদা মেটে না। তাছাড়া শিশুদের জুস জাতীয় খাবার খাওয়ালে তাতে মিষ্টিজাতীয় উপাদান বেশি থাকার ফলে ক্ষুধা তাড়াতাড়ি নিবৃত্ত হয়ে যায় এবং মূল খাবারের প্রতি তাঁর আগ্রহ কমে যায়। তাই এসব খাওয়া থেকে আপনার শিশুকে নিরুৎসাহিত করুন।
৭। শিশুকে তার খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় বেধে দেওয়াঃ
শিশুকে আধাঘণ্টার বেশি সময় ধরে খাওয়ালে শিশুর মধ্যে অরুচি তৈরির পাশাপাশি হজমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই চেষ্টা করুন সে যেন ২০- ৩০ মিনিটের মধ্যে খাওয়া শেষ করতে পারে। তবে যদি সে ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাকে দেয়া খাবার শেষ করতে না পারে তাহলে জোড়াজুড়ি করবেন না।
৮। টেলিভিশন দেখতে দেখতে শিশুকে খাওয়ানো বন্ধ করাঃ
আজকাল প্রায় শিশুই টেলিভিশনে কার্টুন দেখতে দেখতে খাওয়া করে যা একটি অত্যন্ত খারাপ অভ্যাস। পরিবারের সবাই একত্রে বসে শিশুকে সঙ্গে নিয়ে খাওয়া দাওয়া করলে অন্যদের খেতে দেখে তাঁরও খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে।
শিশুর গড় ওজন লক্ষ্য করে তার শরীরে পুষ্টির সরবরাহ যথেষ্ট কি না তা বোঝা যায়। তাই খাওয়া দাওয়া নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন না হয়ে আপনার শিশুটি যাতে হাসিখুশি, সজীব ও প্রাণবন্ত থাকে ও ঘনঘন অসুখে আক্রান্ত না হয় সেটা খেয়াল রাখুন।



 
                                