টক দই খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা
 January 24, 2018
January 24, 2018
                                        
                                            
                                             14692 Views
14692 Views
                                        
                                        
                                            
                                     
                                        টক দই একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও আমিষ পাওয়া যায়। এতে কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকেনা। এর পুষ্টিগুণ দুধের চেয়েও বেশি। রোগ প্রতিরোধেও এর ভুমিকা রয়েছে। আসুন জেনে নিই টক দইয়ের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে।
টক দই একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও আমিষ পাওয়া যায়। এতে কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকেনা। এর পুষ্টিগুণ দুধের চেয়েও বেশি। রোগ প্রতিরোধেও এর ভুমিকা রয়েছে। আসুন জেনে নিই টক দইয়ের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে।
টক দই খাওয়ার উপকারিতা:
১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
খাদ্যগুণের বিচারে টক দইয়ের তুলনা নেই। এতে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন B2, ভিটামিন B12 রয়েছে । বারবার অ্যান্টিবায়োটিক খেলে অন্ত্রের খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে ভাল ব্যাক্টেরিয়ারও মৃত্যু হয়। দইয়ে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া রোগ উৎপাদনকারী ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সমুহকে শরীরে ঢুকতে বাঁধা দেয়। তাই নিয়মিত টক দই খেলে তা দেহকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি শরীরে ঠান্ডা লাগা, সর্দি ও জ্বর রোধেও ভালো কাজ করে।
২। হজম শক্তি বৃদ্ধি:
টক দইয়ে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া সমূহ শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে বাড়িয়ে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। দইয়ে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া লেক্টোজকে ভেঙ্গে লেক্টিক এসিড তৈরী করে। ফলে গ্যাসের সমস্যা কম হয়। তাছাড়া এতে যে আমিষ থাকে তা দুধের চেয়ে সহজে ও অনেক কম সময়ে হজম হয়। তাই যাদের দুধের হজমে সমস্যা হয় তারা দুধের পরিবর্তে টক দই খেতে পারেন।
৩। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে:
গ্রীষ্মকালে দেহের জন্য অন্যতম আদর্শ খাদ্য টক দই। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই গ্রীষ্মকালে যখন প্রচণ্ড গরম পড়ে তখন নিয়মিত টক দই খেতে পারেন।
৪। দেহের ওজন কমাতে:
টক দই একটি ভালো স্ন্যাকস, কারণ এতে ফ্যাট কম থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকে যা হজম করতে শরীরের অনেক সময় লাগে। ফলে পেট ভরা বোধ হয় ও শক্তি বেশী পাওয়া যায় । এর ফলে অতিরিক্ত খাবারও খেতে ইচ্ছা করে না। এটি খেলে পেট ভরা বোধ হয়। তাই পুষ্টিহীন ক্যালরি যুক্ত ফাস্টফুড বা জাংক ফুড বেশি না খেয়ে পুষ্টিকর টক দই খেতে পারেন যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
৫। হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করা:
টক দইয়ে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন B2, ভিটামিন B12 থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকার কারণে হাড় ও দাঁতের গঠনে ও মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই অষ্টিওপোরেসিস ও আরথ্রাইটিস বা বাত ব্যথার রোগীরা নিয়মিত টক দই খেলে উপকার পেতে পারেন। বিশেষ করে মহিলারা যারা বেশি ক্যালসিয়াম এর অভাবে ভোগেন তাদের টক দই নিয়মিত খাওয়া উচিত।
৬। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে:
কম ফ্যাটযুক্ত টক দইয়ে থাকা ল্যাক্টোবেসিলাস, অ্যাসিডোফিলাস এর মতো বিভিন্ন প্রোবায়োটিকস থাকে যা রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) এলডিএল এর পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এটি রক্ত শোধন বা পরিসষ্কার রাখতে ভুমিকা রাখে। উচ্চ রক্ত চাপের রোগীরা নিয়মিত টক দই খেয়ে রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। নিয়মিত টক দই খেলে তা অন্য খাবার থেকে পুষ্টি নিয়ে শরীরকে সরবরাহ করে থাকে। ডায়বেটিস ও হার্টের রোগীরা নিয়মিত টক দই খেয়ে তাদের অসুখগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
৭। বুড়িয়ে যাওয়া বা অকাল বার্ধক্য রোধে:
এটা ব্রেইনকে স্ট্রেস দূরকারী উপকারী অ্যামাইনো এসিড “টাইরোসিন” সরবরাহ করে, যা মানসিক প্রশান্তি দেয় এবং ক্লান্তি কমায়। এছাড়া এটি শরীরে টক্সিন জমতে বাধা দেয়। শরীরে টক্সিন কমার ফলে ত্বকের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। এটি খাদ্যনালীকে পরিষ্কার রেখে শরীরকে সুস্থ রাখে ও ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধসহ অকাল বার্ধক্য থেকে বাঁচায়।
টক দই একটি পুষ্টিকর, তৃপ্তিকর, সর্বজন সমাদৃত ও সহজ লভ্য খাবার। খাদ্যগুণের নিরিখে টক দই হল অলরাউন্ডার। ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন B2, ভিটামিন B12 - কী নেই টক দইয়ে! তাই প্রতিটি মানুষেরই উচিত নিয়মিত টক দই খাওয়া।



 
                                