আগে ভাগেই সেরে নিন আপনার রাতের খাবার
 January 30, 2018
January 30, 2018
                                        
                                            
                                             3611 Views
3611 Views
                                        
                                        
                                            
                                     
                                        আমরা সাধারণতঃ ঘুমানোর কাছাকাছি রাতের খাবার খেয়ে অভ্যস্ত। এটা অত্যন্ত খারাপ অভ্যাস। এ খাদ্যাভ্যাসের অনেক মন্দ দিক রয়েছে। রাতের খাবার বা ডিনার ঘুমানোর অন্তত: তিন ঘন্টা আগেই সেরে নেয়া উচিত। রাতের খাবার কেন আগে খেতে হবে চলুন তা বিস্তারিত জেনে নিই।
আমরা সাধারণতঃ ঘুমানোর কাছাকাছি রাতের খাবার খেয়ে অভ্যস্ত। এটা অত্যন্ত খারাপ অভ্যাস। এ খাদ্যাভ্যাসের অনেক মন্দ দিক রয়েছে। রাতের খাবার বা ডিনার ঘুমানোর অন্তত: তিন ঘন্টা আগেই সেরে নেয়া উচিত। রাতের খাবার কেন আগে খেতে হবে চলুন তা বিস্তারিত জেনে নিই।
রাতের খাবার খাওয়ার পরপর শুয়ে পড়লে কি কি ক্ষতি হয়?
ইউরোপ-আমেরিকায় লোকেরা সাধারণত সন্ধ্যা না হতেই রাতের খাবার খেয়ে নেয়। আবার অনেকে দিনের আলো থাকতেই খাবার শেষ করে। এজন্য তারা ফিট ও কর্মঠ হয়। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে উল্টো। আমরা অনেকে রাতের খাবার খেয়েই দেই ঘুম। কোনো নড়া চড়া করিনা, অনেক সময় আবার খেয়েই শুয়ে শুয়ে রাত জেগে টিভি দেখতে থাকি। এতে আমাদের বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ক্ষতি হয় যেগুলো নিম্নরূপ:
- ভরা পেটে খেয়েই শুয়ে পড়লে আমাদের যেহেতু আর শারীরিক পরিশ্রম হয় না তাই খাবারের পুরো ক্যালোরি ফ্যাট হিসাবে শরীরে জমে থাকে। তাছাড়া খাবারগুলোও ঠিক মতো হজম হয় না। প্রতিনিয়ত এভাবে অনিয়মের ফলে শরীরের ওজন অনেক বেড়ে যেতে পারে।
- ওজন বেশি হলে হার্টের সমস্যা, ডায়বেটিসের সমস্যা সহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- হজমের সমস্যা হওয়ার ফলে বুক জ্বালা পোড়া, গ্যাস, ঢেকুর, মাথাব্যথা, ফুসফুসে প্রদাহ ইত্যাদি হতে পারে।
- অনেক দিন ধরে খাবারে এরকম অনিয়ম হলে অ্যাসিডিটি সমস্যার জন্য খাদ্যনালির ক্যান্সারও হতে পারে।
রাতের খাবার খাওয়ার ২-৩ ঘণ্টা পরে বিছানায় গেলে কি কি লাভ হয়?
- ভারি খাবার হজম হতে কমপক্ষে তিন ঘন্টা সময় লাগে। তাই যদি ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে খাবার খাওয়া হয় তাহলে খাবার ঠিকমতো হজম হবে পাশাপাশি হালকা ক্ষুধার ভাব সৃষ্টি হবে যা শরীরের ফ্যাট ক্ষয় হতে সাহায্য করবে। এভাবে শরীরের সঞ্চিত অতিরিক্ত ফ্যাট বার্ন হলে তা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
- খাবার হজম করতে সারাদিন আমাদের শরীরের পরিপাকতন্ত্র অনেক পরিশ্রম করে। স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে অর্থাৎ রাতের খাবার খাওয়া তাড়াতাড়ি শেষ করলে আমাদের পরিপাকতন্ত্র খানিকটা বিশ্রামের সুযোগ পাবে ও সুস্থ্য থাকবে। রাতের খাবার ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে খাওয়া সেরে ফেললে পরিপাকতন্ত্র যেহেতু বিশ্রামের যথেষ্ট সুযোগ পায় তাই রাতের ঘুমও ভাল হয়।
- অধিকাংশ সময় ক্ষুধার হরমোন “ঘ্রেলিন” স্থুল মানুষদের মধ্যে অকার্যকর থাকে। রাতের খাবার খাওয়ার ২-৩ ঘণ্টা পরে বিছানায় গেলে ক্ষুধার হরমোনটি নিয়ন্ত্রিত হয় ফলে ক্ষুধা কম লাগে। তাই যাদের স্থুলতার সমস্যা আছে তারা একাধারে যদি কিছুদিন অধিক রাতে না খেয়ে আগে ভাগেই খেয়ে নেন তাহলে এই অভ্যাস তাদের অনেক উপকার বয়ে আনতে পারে।
- একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা রাতের খাবার দেরি করে খায় তাদের হৃদরোগ হবার ঝুঁকি ৫৫% পর্যন্ত বেড়ে যায়। [১] তাই যদি রাতের খাবার তিন ঘন্টা আগেই সেরে নেওয়া যায় তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে রাতের বেলায় যদি তারা তাড়াতাড়ি খেয়ে নেন তাহলে সঠিক সময়ে কম ক্ষুধা নিয়ে খাওয়া হবে যা তাদের রক্তে ইন্সুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে।
সুস্থতার জন্য 'কী' খেলাম তার চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো 'কখন' খেলাম-সেটা। বিভিন্ন হরমোন ও রাসায়নিক উপাদানসমূহ প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরের হজম, বিপাকক্রিয়া, রুচি, খিদে নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজে সর্বদা ব্যস্ত থাকে। এসব রাসায়নিক পদার্থের নিঃসরণের মধ্যে একটা ছন্দ আছে, যা খাবারের পরিমাণ ও খাবারের সময়সূচীর সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তাই সুস্থ্য থাকার জন্য সঠিক সময়ে ও নিয়ম অনুযায়ী খাওয়া দাওয়া করা উচিত।
তথ্য সূত্র:
১। https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/ar...



 
                                